বঙ্গ ডেস্ক 17 August 2020 , 1:10:32 প্রিন্ট সংস্করণ
৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে বিলে চাষাবাদ করতে যাওয়ার জন্য কৃষকদের ব্যবহৃত সংযোগ বিহীন একটি সরু রাস্তার উপর ব্রিজ নির্মাণ করায় হতবাক এলাকাবাসী। এ অবস্থায় নির্মিত ব্রিজটির দুই পাশে সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় কৃষকদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। অভিযোগ রয়েছে, প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা না করেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতার কারণে ব্রিজটি নির্মাণ করা হলেও তা কোন কাজে আসছে না। বর্তমানে ব্রিজটি ওই এলাকার কৃষকদের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের আপুয়ারখাতা সোত্তার ভিটা এলাকায় একটি সংযোগ বিহীন সরু রাস্তায় জনৈক আশরাফের জমির উপর ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ৩৬ ফিট দের্ঘ্যরে ও ১৪ ফিট প্রস্তের এ ব্রিজটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২ লাখ ৪১ হাজার ৪’শ ৩৬ টাকা। নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান লুৎফর রহমান বকসী নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যা চলতি বছরের জুনে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
কিন্তু নির্মাণের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রিজের সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় ওই পথে যাতায়াত করা কৃষকরা পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক রাস্তায় ব্রিজের অভাবে মানুষজন চলাচল করতে পারছে না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিত ভাবে শুধুমাত্র কৃষকদের বিলে চাষাবাদ করতে যাতায়াতের জন্য একটি গুরুত্বহীন সরু রাস্তায় কেন এত বড় ব্রিজ নির্মাণ করলেন তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। এই পথে যোগাযোগের কোন রাস্তা না থাকায় লাখ-লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি কোন কাজে আসছে না। ফলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ ভেস্তে গেছে।
স্থানীয় আশরাফ আলী বলেন,‘ওই জায়গায় ছোট একটা গর্ত ছিল, সেখানে একটি কালভার্ট দিলেই হতো। এখানে এত বড় ব্রিজ নির্মাণ করে সরকারের লাখ-লাখ টাকা কেন ব্যয় করা হলো, তা দেখে আমরা হতবাক। ব্রিটিশ আমল থেকে এলাকার কৃষকরা বিলে যাওয়ার জন্য রাস্তাটি ব্যবহার করে আসছে। ব্রিজ থেকে প্রায় ১ হাজার ফুট দুরে গিয়ে রাস্তাটি শেষ হয়েছে। এ কারণে রাস্তাটি দিয়ে যানবাহন তো দুরের কথা, কোন পথচারীও চলাচল করে না।
পান্ডুল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার মঙ্গা বলেন, ‘রাস্তাটি রেকর্ডভুক্ত, ওই রাস্তা দিয়ে কৃষকরা তাদের জমিতে ধান কাটা মাড়াই ও চাষাবাদের জন্য যায়। বিলে
যেতে তাদের যেন সমস্যা না হয় সেজন্য ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী লুৎফর রহমান বকসী বলেন, বর্ষাকাল শেষ হলে সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট করে দেয়া হবে। যেখানে প্রয়োজন নেই সেখানে ব্রিজ হয়, আর যেখানে প্রয়োজন, সেখানে ব্রিজ হয় না। তবে বিষয়গুলো দেখভাল করে পিআইও, এখানে আমাদের কিছু নেই।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা বলেন, ব্রিজটি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের হলেও বাস্তবায়ন হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে। নতুন রাস্তা বের হবে, ওটা রেকডি রাস্তা। বন্যা শেষ হলে মাটি কাটা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুর কাদের বলেন, বিষয়টি দেখব আমরা, সেখানে ব্রিজ নির্মাণে যুক্তিযুক্ত আছে কিনা।