
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীর হাঁটু পানিতে মৃত্যু রহস্যের জট খুঁলেছে। তাকে হত্যাকারী সাবেক প্রেমিক জুয়েল রানাকে(২১) পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মতুর্জা হোসেনের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মুশফিরাত জাহান নিঝুমের (১৯) লাশ (২৭ জুলাই) বাড়ীর পাশের একটি পুকুরে হাঁটু পানি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন লাশ মর্গে পাঠিয়ে দেন।
বাড়ীর লোক এ ঘটনাকে আত্বহত্যা প্রচরণা চালালেও পুলিশ কিছু আলামতের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি ব্যাবহার করে নিঝুমের সাবেক প্রেমিক হত্যাকারী জুয়েল রানাকে(২১) তার বাড়ী থেকে গ্রেফতার করে।
সে সদর ইউপির মধ্যরাজিব চেংমারী গ্রামের আনছার আলীর ছেলে। তাকে আদালতে প্রেরণ করলে বিচারকের কাছে হত্যাকান্ডের কথা শিকার করে।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এম হারুন অর রশিদ বিকেলে থানায় এক প্রেস ব্রিফিং করে হত্যাকান্ডের বিষয়ে বর্ণনা দেন।
তিনি জানান, হত্যাকান্ডটি খুবই পরিকল্পনা মাফিক করা হয়েছে। হত্যার নায়ক জুয়েল রানা নিঝুমের সাবেক প্রেমিক।
২০১৭ ও ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাদের প্রেম অটুট থাকে। বর্তমান প্রেমিক একই ইউনিয়নের বাজেডুমরিয়া গ্রামের হেলাল মেম্বারের ছেলে তৌফিক(২০)। নিঝুম তাকে প্রত্যাখ্যান করায় জুয়েল রানা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
ঢাকা থেকে দু’ বছর পর বাড়ী ফিরে মোবাইল ফোনে সে নিঝুমকে বলে তোমাকে আমি ভুলতে পারছি না। তুমি আমাকে সহযোগিতা করলে আমি তোমাকে ভুলতে পারব। কারণ জানতে চাইলে জুয়েল কবিরাজের মাধ্যমে সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবে বলে জানায়। এতে রাজি হওয়ায়, ৭টি মসজিদের পানি ও ৩টি মন্দিরের মাটি নিয়ে এসে ঘটনার দিন বিকালে নিঝুমের বাড়ীর কাছে সকলের অলক্ষে তা দিয়ে আসে। পরে ফোনে বলে মসজিদের পানি তোমার বাড়ীর ভিতরে ছিটিয়ে দিও, আর মাটি বাড়ীর চারপাশে দিও। মধ্য রাতে কবিরাজকে নিয়ে এসে তোমার সাথে সাক্ষাতে মন্ত্রের মাধ্যমে সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে। তবে তুমি বাড়ীর বাহিরে আসলে লোকজন টের পাবে।
তাই লিটনের দোকান থেকে নেয়া ঘুমের ট্যাবলেটগুলো বাড়ীর সবাইকে খাইয়ে দিও। তা হলে আর কোন সমস্যা হবে না দেখা করতে।
সেই কথা মতে তাকে বিশ্বাস করে নিঝুম ২৭ জুলাই রাত ১টা ৩০ মিনিটে বাড়ীর পিছনের সুপারীর বাগানে দেখা করে। কবিরাজ তার সাথে না থাকায় উভয়ে তর্কে লিপ্ত হয়। এক পযার্য়ে জুয়েল রানা তাকে পরিকল্পনা মাফিক গলা টিপে হত্যা করে। পরে তার লাশ পুকুরের হাঁটু পানিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় নিঝুমের বাবা বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
এ বিষয়ে শুক্রবার বিকালে প্রেস ব্রিফিং এর সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল আজিজ জানান, নীলফামারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান (বিপিএম,পিপিএম) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) অশোক কুমার পালের (পিপিএম) দিক নির্দেশনায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা উন্মোচন করা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি জানান।