সারাদেশ

তারাগঞ্জে শিক্ষকদের রমরমা প্রাইভেট বাণিজ্য

  এম এস আঁখি// তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি 25 August 2020 , 4:35:11 প্রিন্ট সংস্করণ

তারাগঞ্জে শিক্ষকদের রমরমা প্রাইভেট বাণিজ্য

করোনা ভাইরাস সংক্রমণকালে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে রংপুরের তারাগঞ্জে শিক্ষকদের প্রাইভেট বাণিজ্য রমরমাভাবে চলছে। এক শ্রেণির শিক্ষক বাড়িতে রীতিমতো বিদ্যালয় খুলে বসেছেন। তবে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই। এতে একদিকে যেমন করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে, অন্যদিকে স্বল্প আয়ের অভিভাবকরা করোনাজনিত এই আর্থিক সংকটের সময়ে সন্তানের প্রাইভেটের অর্থ যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে গত ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর গত ২৬ মার্চ সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। সেই থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও স্কুল-কলেজের এক শ্রেণির শিক্ষক ও নামে মাত্র কলেজ পড়–য়া ছাত্ররা শিক্ষক সেজে শিক্ষাদানের নামে বাড়িতে কিংবা বাজারের পাশে রুম ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট বাণিজ্য শুরু করেছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো তাগিদ নেই। তারা ব্যাচ হিসেবে তাদের ছোট ছোট কক্ষে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছে। এতে প্রতি ব্যাচে ২৫ থেকে ৩০ জন করে ছাত্রছাত্রী অংশ নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, এক শ্রেণির শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করছেন। এমনকি অনেক শিক্ষক ফোন করে ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট পড়তে উৎসাহিত করছেন। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার ভয়ে শিক্ষকদের বাড়ি বা ভাড়া করা রুমে গিয়ে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য হচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলার সরকারি বেসরকারি বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েসহ গ্রামঞ্চলের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।
শুধু উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকরাও প্রাইভেট বাণিজ্য করছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে। সচেতন অভিভাবকরা মনে করেন সরকারি নির্দেশ উপেক্ষিত হওয়ায় গোপনে প্রশাসনিক তৎপরতার মাধ্যমে এই প্রবণতা বন্ধ করা একান্ত অপরিহার্য।
তারাগঞ্জ ও/এ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বারী মন্ডল বলেন, করোনাকালে যেখানে শিশুদের স্কুলে আসতে দেওয়া হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে গোপনে বাড়ি বাড়ি সেই একই কাজ যখন করা হচ্ছে, তা কখনই মেনে নেওয়া যায় না। এছাড়া প্রাইভেট পড়ানোও সরকারিভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুতরাং এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং প্রশাসনের তৎপর হওয়া একান্ত আবশ্যক।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোস্তফা জামান চৌধুরী বলেন, এটা স্বাস্থ্যবিধির চরম লংঘন। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে পারে। এ ব্যাপারে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন হওয়া উচিত বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আরও খবর

Sponsered content