সিরাজুল ইসলাম বিজয় 1 October 2020 , 2:42:23 প্রিন্ট সংস্করণ
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় শতাধিক একর ফসলি জমি ডোবায় পরিনত হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে কৃষকরা ফসল আবাদ করতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ড্রেনের জন্য উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের দ্বারে দ্বারে একাধিকবার ঘুরেও কোনো সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দ্রুত ড্রেন নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানাগেছে, উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের শাইলপুকুর, রঘুনাথপুর, বারাপুর গ্রামের শতাধিক একর ওই জমিগুলোতে পাঁচ বছর আগে তিন ধরনের ফসল আবাদ করতেন কৃষকরা। বর্তমানে বোরো মৌসুমে অল্প কিছু জমিতে ধান আবাদ করতে হচ্ছে। জমির চারপাশ দিয়ে স্থাপনা নির্মান ও অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খনন করায় পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে দেখে বোঝার উপায় নেই এটি ডোবা নাকি ফসলি জমি। ভুক্তভোগী প্রায় ১শ কৃষক উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে একাধিকবার অভিযোগসহ ড্রেনের জন্য আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি।
শাইলপুকুর গ্রামের কৃষক আখতারুল ইসলাম বলেন, আমরা পাঁচ বছর ধরে কোনো প্রকার চাষাবাদ করতে পারছি না। অতিদ্রুত ড্রেনের ব্যবস্থা করে আমাদের জমিগুলো চাষযোগ্য করার জোর দাবি জানাচ্ছি। একই কথা বলেন কৃষক ওমর আলী, আফছার আলী, আবু বক্কর, আলতাব হোসেন।
দুঃখ ভরা মন নিয়ে দিনমজুর আসিদুল ইসলাম বলেন, মুই কষ্ট করি দিন আনি দিন খাওং। আশা ব্যাংকের লোন নিয়া ডোবাত মাছ ছাড়ি দিছনুং। বানের পানি মোড় সউগে শ্যাস করি দেইল। এখন পথের ভিখারী হামার পাকে এখন কায় দেকপে।
কৃষক আফছার আলী বলেন, মোড় চোকের সামন দিয়া বড় বড় মাছ ঝাপি যাওছে, দ্যাখি কলিজাটা ছিরি যাবার নাগছে, কিচুই করির পাংচো না বাহে। বানের পানি মোড় তিন বিঘা জমির ধান, দশ কাটা জমির কলা, নব্বইটা কাটালের গাছ গিলি খেয়া ফ্যালাইছে। হামরা এখন কি করি খামো দ্যাখার কেউ নাই।
সয়ার ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মহিউদ্দিন আজম কিরন বলেন, অনাবাদি জায়গাটির পানি আগে আখিঁরারপাড় নালা দিয়ে বেড় হয়ে যেতো। সারাদেশে একই পরিস্থিতি তবে পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেনের জায়গা নির্ধারণ করতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে পানি নিস্কাশনের স্থায়ী ব্যবস্থা ও পরিকল্পনা করা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান লিটন বলেন, ওই এলাকার কয়েক জন কৃষক আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছি, বন্যা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই ওই ডোবার প্লাবিত পানি যত দ্রুত সম্ভব নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।