আব্দুর রহিম পায়েল ,গংগাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি 18 September 2020 , 6:14:13 প্রিন্ট সংস্করণ
গঙ্গাচড়ার চরাঞ্চলে আবারো তিস্তার তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে বিলীন হয়ে গেছে ঈদগাহ, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ২০০ পরিবারের বাড়ী-ঘর। গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পায়। সে সাথে ভাঙ্গনের তীব্রতাও বৃদ্ধি পায়।
উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের ইচলী গ্রামে নতুন নতুন এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
জানা যায়, চলতি বর্ষায় অব্যহত ভাঙনে তিস্তা মূল গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে আরও দুইটি ধারায় তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নতুন গতিপথ সংলগ্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে প্রবল ভাঙ্গন। এতে ভেঙ্গে গেছে শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়ক ও সেতুর মোকা।
স্থানীয়রা জানায়, ভাদ্র মাসে সাধারণত নদী শান্ত থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলি জমি, মাছের পুকুরসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভেসে গেছে।
শুক্রবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ইচলী ঈদগাহর কোন অস্তিত্ব নেই। যে কোন সময় ঈদগাহ সংলগ্ন এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসাটিও তিস্তার গর্ভে বিলিন হওয়ার চরম আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ওই এলাকায় শ্রী মিথুন চন্দ্র বলেন, সরকার শুধু পরিকল্পনা করেন এই পরিকল্পনা কত দিনে বাস্তবায়ন হবে তার কি ঠিক আছে? ততো দিনে হামার ঘর-বাড়ি নদীতে চলে যাবে। দ্রæত বেরিবাঁধ দেয়া না হলে ইচলী গ্রামের ৩ হাজারের অধিক পরিবার নদীভাঙ্গনের শিকার হয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়বে। তিনি আরো বলেন, আমাদের উপাসনার জন্য পূর্ব ইচলী মন্দিরটিও নদীতে ভেঙ্গে গেছে।
একই এলাকার চেংটু মিয়া বলেন, হামাক মিডিয়া করি কি হইবে হামাক আল্লাহ দেখেনা, সরকারও দেখেনা। তার ওপর বন্যায় ফসলি জমি, পুকুর, রাস্তা-ঘাটসহ হামার সব কিছু ভাঙ্গি নিয়া গেল নদী।
লক্ষীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লা আল হাদী বলেন, অনেক চেষ্টা করেও ভাঙন থেকে ঈদগাহ মাঠটি রক্ষা সম্ভব হয়নি। তিনি আরো বলেন, বিনবিনা থেকে শংকরদহ পর্যন্ত ৭ কিঃমিটার বেরিবাঁধ নির্মিত হলে পশ্চিম ইচলি, মধ্য ইচলী ও পূর্ব ইচলি গ্রামে নদী ভাঙ্গন রোধ সম্ভব। অন্যথায় এ বিশাল এলাকা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাবার চরম আশঙ্কা রয়েছে।
এ দিকে গত কয়েক দিনে অবিরাম বৃষ্টিতে উপজেলার সকল এলাকার বিশাল নিম্নাঞ্চল পানবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে প্রায় ১০ হাজার পরিবার জলমগ্ন হয়ে অতিকষ্টে জীবন যাপন করছে।