মোস্তাক আহমেদ, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধিঃ 15 November 2020 , 7:31:55 প্রিন্ট সংস্করণ
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার একটি পৌর সভাসহ ৪টি ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বহমান এক সময়ের খরস্রোতা তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ এখন সর্ব নিম্ন পর্যায়ে এসে বর্তমানে হাটু পানিতে পরিনত হয়েছে।
এ বছর শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে পানি প্রবাহ অস্বাভাবিক ভাবে হ্রাস পেয়ে ডালিয়া পয়েন্ট থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত প্রায় ৭৫ কিঃমিঃ নদীর
অধিকাংশ স্থান এখন কংকাল সার ধু-ধু বালুচর।
তিস্তা নদীর উজানে ভারত সরকার
পশ্চিম বঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে একটি খালের
মাধ্যমে শুকনো মৌসুমে নদী থেকে ১৫০০ থেকে ২০০০ কিউসেক পানি মহানন্দা নদীতে নিয়ে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশে তিস্তার বর্তমানে এঅবস্থা।
ভারত তিস্তা থেকে পানি প্রত্যাহার করায় তিস্তা বাঁধ প্রকল্প প্রায় অকার্যকর হয়ে
পড়েছে। নদীতে পানি না থাকায় জেলায় মৎস্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
জীব বৈচিত্রতা হুমকির মধ্যে পড়েছে। মৎস্য জীবিদের কর্মহীনতা, কৃষিতে সেচ, আরসেনিক সমস্যা সহ প্রাকৃতিক দূর্যোগ লেগেই আছে।
নদীর বুক জুরে এখন ধু-ধু বালুচর আর ফসলের মাঠ। চলছে ধান, গম,আলু, পিয়াজ, মরিচ, কুমড়া, বাদাম সহ নানা ধরনের রবি শষ্যর চাষ। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা
আদায়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় এবং স্বাধীনতার ৫০ বছরে কখনও নদী
ড্রেজিং না করায় নদীর তল দেশ বালু দ্বারা ভরাট হয়ে বর্তমানে মরা খালে
পরিনিত হয়েছে। নৌ চলাচলে বিরুপ প্রভাব পড়েছে। নদীতে পানি না থাকায়
দীর্ঘদিন ধরে চীলমারী বন্দর ও বুড়িমারী বন্দরের সাথে নৌ যোগে মালামাল
পরিবহন বন্ধ হয়েগেছে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ডালিয়া পয়েন্ট সূত্রে
জানাগেছে স্থানীয় ভাবে চাষীরা তিস্তার ডান ও বাম তীরে ইনলেকট্রকালচারের
মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও ডিজেল চালিত পাম্প দিয়ে সেচ কাজে পানি ব্যবহার করা
এবং শুস্ক মৌসুমে তিস্তার পানি সরবরাহ কমে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে
তিস্তার পানি প্রবাহ অস্বাভাবিক হ্রাস পেয়েছে। এতে করে চলতি মৌসুমে
চাষীরা বোর চাষ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। নদীর পানি হ্রাস ও উজানের
পাহাড়ী ঢলে বালু পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় সুস্বাদু মাছসহ অনান্য
মাছ নাথাকায় নদীকে ঘিরে জেলে পরিবার গুলোর আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে গেছে।
নদী ড্রেজিং না করায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে অসংখ্য বাঁক ও চরের সৃষ্টির ফলে বর্ষা কালে নদীর পানি ধারন ক্ষমতা কমে যায় এবং কাউনিযা এলাকার উভয় তীরের প্রায় ৩০ কিঃমিঃ গ্রাম গুলো নদী ভাঙ্গন ও বন্যা কবলিত হয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।