বঙ্গ ডেস্ক 19 August 2020 , 8:24:57 প্রিন্ট সংস্করণ
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় প্রতিবছর নদী ভাঙন আর বন্যায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা।
তিস্তা নদী বেষ্টিত এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ বন্যা আর নদীর ভাঙনে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।
বন্যা ও নদী ভাঙনের সময় এসব নিঃস্ব মানুষকে ত্রাণের নামে করুনা না করে বন্যা ও ভাঙন থেকে তাদের রক্ষার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রয়োজনীয় পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহন করার দাবি জানান উপজেলার লক্ষীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লা আল হাদী।
বুধবার (১৯ আগস্ট) সরেজমিন উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নদীর সাথে যুদ্ধ করে বাঁচানো চাল-চুলা নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে ছুটছেন ওই গ্রামের এজাজুল ও আক্তারুল ২ভাই। তারা জানান, গত তিন বছরে তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে তাদের প্রায় ১০ বিঘা জমি তিস্তা নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এখন তাদের মাথা গোজার কোন জায়গা নেই। তাই তারা বাধ্য হয়ে তিস্তা প্রতিরক্ষা বাঁধে এসে আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়া গঙ্গাচড়ার বিভিন্ন চরগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ মানুষেরই চোখে-মুখে অসহায়ত্বের ছাপ।
ভাঙনের শিকার মোন্নাফ মিয়া জানান, নদীতে ভেঙ্গে সব কিছু শেষ। যা জমি ছিল সব তিস্তায়। এখন আমরা পথে বসেছি। তিস্তার ভাঙ্গন রোধে সরকার কোন ব্যবস্থা না নিলে নদীতে সব চর বিলিন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, বানের জল সহ্য হলেও ভাঙ্গনের সাথে যুদ্ধটা বড়োই দুঃসাধ্যের। উজানের ঢলের আঘাতে সব হারিয়ে তাদের করুণ আর্তনাদ পৌঁছেনা কর্তাদের কানে। তাদের অভিযোগ আমাদের দেখার কেউ নেই।
বরাবরই উপেক্ষিত চরের মানুষগুলোর জীবন মানোন্নয়নে ত্রাণ নয়, সুষ্ঠু পরিকল্পনার জন্য চর উন্নয়ন বোর্ড গঠনের দাবি জানিয়েছেন নদী নিয়ে কাজ করা রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড, তুহিন ওয়াদুদ। সরকার নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা না নিলে প্রতি বছর এভাবে মানুষ সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পরবে।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভূঞা জানান, চরাঞ্চল নিয়ে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগেও কিছু আশ্রয় প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এসব নদী ভাঙ্গা মানুষের আশ্রয় করে দিতে পারলে বানভাসিদের আর কোনো সমস্যা থাকবে না।