বাবলুর রশিদ বাবলু ,(পঞ্চগড় জেলা) প্রতিনিধি : 8 September 2020 , 3:24:13 প্রিন্ট সংস্করণ
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন ফাতেমা বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূ।
গত ১ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) আদালতে গিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করলে আদালত তেঁতুলিয়া থানাকে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেয়।
পরে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ আদালতের নির্দেশে গত ৬ সেপ্টেম্বর (রোববার) থানায় মামলাটি দায়ের করে।মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৪ সালে তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের খেরকিডাঙ্গী গ্রামের মজিবুল হকের মেয়ে ফাতেমা বেগমের সঙ্গে একই ইউনিয়নের ফতুয়াপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে শহিদুল ইসলামের (৩২) পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়েতে মেয়ে জামাইসহ সাংসারিক উন্নতির লক্ষ্যে দুই লাখ টাকার উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়। তাদের ঘর-সংসার চলাকালীন হঠাৎ শহিদুল ফাতেমার মাধ্যমে তার বাবার কাছ থেকে এক লাখ টাকার যৌতুক দাবি করে আসছিলেন।
কিন্তু ফাতেমার বাবার আর্থিক অভাবের কারণে তার পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এর পর থেকে শুরু হয় ফাতেমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।এসময় টাকা না পেয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন কোলের সন্তান কেড়ে নিয়ে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে সে তার বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা উভয় পক্ষকে ডেকে সালিশ বৈঠক করলেও কোনো সমাধান হয়নি। গত ২৮ আগস্ট কোলের সন্তানকে দেখতে স্বামীর বাড়ি গেলে তাকে আবারো মারধর করে সন্তান কেড়ে নিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। মারধরে আহত হয়ে বাড়ির বাইরে পরে থাকে সে। পরে আশপাশের লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাবার বাড়িতে খবর দিয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। মাথায় গুরুতর আঘাত লাগার কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় চিকিৎসক।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিম ফাতেমা বেগম বলেন, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন টাকার জন্য বিভিন্ন সময় আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। নিজ সন্তানদের দেখতে গেলে তারা আমার মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালায়। আমি এ নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
তেঁতুলিয়ার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালতের নির্দেশে মামলাটি গত ৬ সেপ্টেম্বর দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে তদন্ত চলছে।