বঙ্গ ডেস্কঃ 13 July 2020 , 5:04:26 প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে দ্বিতীয় দফায় কয়েকদিনের ভারীবৃষ্টিপাত ও উজানের পাহারী ঢলে শিমুলবাড়ী এলাকায় শেখ হাসিনা ধরলা সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বারোমাসিয়া ও নীলকমল নদীর পানি হুহু করে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী এবং ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নে ৭শ পরিবার আসবাসপত্র আর গৃহপালিত পশু নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে কোন রকমে উচু বাঁধে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছেন। ।
এদিকে টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তলিয়ে গেছে পাট, ভুট্রা, সবজি ক্ষেত, বীজতলা ও আউশ ধান। উপজেলার ভাঙ্গামোড়, বড়ভিটা, ফুলবাড়ী, শিমুলবাড়ী ও নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে সোমবার সকালে গিয়ে দেখা গেছে, পানিবন্দী ও বাঁধে আশ্রয় নেওয়া পরিবার গুলো চরম দুর্ভোগে জীবন-যাপন করছেন। এ ভাবে টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ভারত থেকে পানি আসা অব্যাহত থাকলে আগামী দুই একদিনের মধ্যে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়বে।
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তলিয়ে গেছে পাট, ভুট্রা, সবজি ক্ষেত,বীজতলা ও আউশ ধান। সেই সাথে তলিয়ে গেছে এ সব এলাকার গ্রামীণ রাস্তাসহ উচু
এলাকার ওই পাকা-আধা-পাকা সড়ক গুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যার আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে বানভাসিরা।
কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, শিমুলবাড়ী এলাকায় শেখ হাসিনা ধরলা সেতু পয়েন্টে ধরলার নদীর পানি বিপদসীমার ৬৩
সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশা করছি আগামী দুই একদিনের মধ্যে ধরলার পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের সোনাইকাজী গ্রামের হযরত আলী ও মকিম উদ্দিনসহ অধিকাংশ পরিবার পানিবন্দী। তারার জানান,আমাদের সবার বাড়ী ও টিউওয়েল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রান্না করা ও বিশুদ্ধ পানির সমস্যা থাকায় গত কয়েকদিন ধরে মানুষের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছি। এখন পর্যন্ত কেউ খোঁজ খবর নেয়নি আমাদের।
ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাবু জানান,তার ইউনিয়নের বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ১ হাজার পরিবার উচু বাঁধে ও আশ্রয়ণ কেন্দ্রে নিয়েছেন। তাদের খাবার , বিশুদ্ধ পানি ও পয় নিস্কাশনের সমস্যাসহ নানা সমস্যা নিয়ে তারা বসবাস করছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান জানান ,উপজেলায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী ও ৭শ পরিবার উচু বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। ধরলার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোমবার দুপুরে সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সাথে জরুরী মিটিং করেছি। পানিবন্দী ও বানভাসীদের পাশে দাড়ানোর আহবান জানানো হয়েছে। পানিবন্দী পরিবারগুলোর তালিকা করে জেলায় পাঠানো হয়েছে। তারপরেও প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে। জিআরের ১২ মেট্রিক চাউল ও ৩০ হাজার টাকা মজুদ আছে। আগামীকাল থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতারণ করা হবে। উপজেলায় দুইটি আশ্রয় কেন্দ্রসহ মোট ৪১ টি স্কুল আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে প্রস্তুত্ত করা হয়েছে।