আব্দুল মালেক, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি 23 September 2020 , 4:56:50 প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুস্থদের
ভিজিএফ ও ভিজিডির চাল ভুয়া তালিকার মাধ্যমে আত্মসাৎ সহ ব্যাপক অনিয়ম ও
দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ও ইউনিয়ন আওয়ামী
লীগের সভাপতি লিখিত অভিযোগ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা
নির্বাহী অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে দাখিল করলেও আজবধি তদন্ত করা হয়নি বলে
অভিযোগকারী জানান।
জানা গেছে, ওই ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আব্দুল জব্বার মঙ্গা ২’শ জন দুস্থ
মহিলার নামে ২ বছর মেয়াদি ভিজিডি কার্ডের তালিকা তৈরি করে উপজেলা মহিলা
বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেন। তালিকায় নাম থাকা দুস্থরা প্রতি মাসে
ভিজিডি কার্ডের ৩০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা। কিন্তু ১ বছর ৮ মাস পেড়িয়ে
গেলেও অনেকেই জানেন না তালিকায় তাদের নাম আছে বা তাদের নামে চাল উত্তোলন
করা হচ্ছে।
১নং ওয়ার্ডের আব্দুর রশিদের স্ত্রী মল্লিকা বেগম (কার্ড নম্বর-২৭৯০), আব্দুল
মমিনের স্ত্রী বিলকিছ বেগম (কার্ড নম্বর-২৭৭৯), ৩নং ওয়ার্ডের জহুরুল হকের স্ত্রী
জোসনা বেগম (কার্ড নম্বর-২৮৩৫), ৬নং ওয়ার্ডের নিমাই চন্দ্রের স্ত্রী তরুবালা
(ভিজিডি কার্ড নম্বর-২৮৯৪) সহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতি মাসে
সরকার আমাদের নামে চাল বরাদ্দ দিলেও আমরা তা জানি না।
উত্তর পান্ডুলের লক্ষী বালা রানী অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যান তার বিধবা ভাতার ৬
হাজার টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা ও তার নাতনী বাক প্রতিবন্ধী অনিকা রানীর
ভাতার ৯ হাজার টাকার মধ্যে ৮ টাকা কেটে নেন। একই এলাকার বরিজ উদ্দিনের দৃষ্টি
প্রতিবন্ধী পুত্র আব্দুল হামিদের কাছ থেকে ভাতার ৯ হাজার টাকার মধ্যে ৬ টাকা
চেয়ারম্যান কেটে নেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আব্দুল জব্বার মঙ্গা গত ইদুল আযাহার পূর্বে ৫
হাজার ৫৩ জন দুস্থ পরিবারের বিপরীতে ১০ কেজি করে ভিজিএফ’র চাল বিতরণ করেন।
কিন্তু ওই তালিকায় চেয়ারম্যান কৌশলে একই ব্যক্তির নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর
কোথাও ৩ বার, কোথাও ২ বার করে একাধিক ওয়ার্ডের সিরিয়াল নম্বর ব্যবহার
করেছেন। গাবতলী এলাকার হেলাল উদ্দিনের ছেলে আব্দুল সামাদের নাম ভিন্ন ভিন্ন
সিরিয়ালে ২ বার ব্যবহার করেছেন (সিরিয়াল নম্বর-৩৩৬২ ও ৩২০৫, জাতীয় পরিচয়পত্র
নম্বর-৮৬৫৮৫৭৪৫১৫)। একই ভাবে আম ভদ্রপাড়া এলাকার মতিয়ার রহমানের পুত্র ফজলুল
হকের নাম তিন বার (সিরিয়াল নম্বর-৩১৮১, ৪৭১৮ ও ৯৮০, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর-
৬৮৫৮৪৩৬৮৬৪) ব্যবহার করা হলেও তারা কেউ ভিজিএফ এর চাল পাননি। এভাবে ইউপি
চেয়ারম্যান প্রায় সহস্রাধিক ব্যক্তির নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ব্যবহার করে চাল
উত্তোলনের মাধ্যমে তা আত্মসাৎ করেছেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি লিখিত অভিযোগ
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে
দাখিল করলেও আজবধি তদন্ত করা হয়নি বলে অভিযোগকারী জানান।
এ ব্যাপারে পান্ডুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার মঙ্গার সাথে কথা হলে
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা ও
ভিত্তিহীন।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহানা আক্তারের সাথে মঠোফনে একাধিকবার
যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া
হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদেননে অনিয়মের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ
করা হবে।