সারাদেশ

দুর্গন্ধে ভরা ডোবা ভরাট করায় স্বস্তিতে হাজিরহাট বাসি-চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আজম কিরন

  তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি: 19 January 2021 , 4:25:08 প্রিন্ট সংস্করণ

হাজিরহাট বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের এখন দুর্গন্ধ সইতে হয় না। দুর্ভোগও পোহাতে হচ্ছে না বাজারের ব্যবসায়ীদের। নামাজ পড়তেও কষ্ট হচ্ছে না বাজারের পাশে গড়ে ওঠা মসজিদের মুচোল্লিদের। এখন আর বাজারে দোকান সরিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয় না এলাকার লোকদের। পুরো বাজার এলাকার চিত্র বদলে গেছে। দিন রাত মুখোরিত থাকছে বাজারটি। বাজারটির উত্তর পাশে পরিত্যক্ত পুকুরটি চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন আজম কিরন ভরাট করে দেওয়ায় বাজারের এই পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে সয়ার ইউনিয়নের হাজিরহাট বাজারটির অবস্থান। বাজারের উত্তর পাশে ছিল বিশাল একটি পুকুর। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঐ পুকুরটিতে আশপাশের লোকজন নানা ধরনের ময়লা আর্বজা ফেলতো আবার অনেকে করতো মল ত্যাগ। বাজারের দূষিত পানি জমে সৃষ্টি হতো দুর্গন্ধধ । দুর্গন্ধের কারণে নামাজ পড়তে দুর্ভোগ পোহাতে কষ্ট হত মুচোল্লিদের। হাট বারে আসা ক্রেতা ও বিক্রেতারাও দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। নামাজ পড়ার যায়গার অভাবে ওই এলাকার লোকজন ঈদের সময় ওই পুকুর পাড়ে গড়ে উঠা দোকান সরিয়ে নামাজ পড়তো। ওই এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি ছিলো পুকুরটি ভরাট করনের। এ দাবি বাস্তবায়নের জন্য তারা বিগত আমলের জনপ্রতিনিধির দারে দারে ঘুরেছেন। ফল না পাওয়ায় তারা এ দাবি বাস্তবায়নের জন্য মহিউদ্দীন আজম কিরনকে ভোট দিয়েছেন। মহিউদ্দীন আজম কিরন চেয়ারম্যান হওয়ার পরে তিনি ওই এলাকা পরিদর্শনে যান। এবং ওই এলাকার লোকদের দাবির পরিপেক্ষিতে পুকুরটি কাবিখা প্রকল্পের অধীনে ভরাট করে দেন।

আজ মঙ্গলবার ১৯ জানুয়ারি  ওই পুকুর দেখতে যান একদল সাংবাদিক। তখন ঘড়ির কাটা বিকেল চারটা বাজে। আসরের নামাজ শেষে মসজিদের ইমাম সাহেব বের হলেন বারান্দায়। বিড়বিড় করে স্রষ্টার নাম জপছেন আর পায়চারি করছেন বারান্দার এমাথা থেকে ওমাথা। মসজিদের অদূরেই সাংবাদিকদের গাড়ি দেখে কিছুটা কটাক্ষ করে বললেন, মিথ্যা লেখালেখি করে কি হবে। উপরওয়ালার কাছে একদিন তো জবাব দিতেই হবে।

মসজিদের ইমাম সাহেবের কথা শুনেই বোঝা গেল ইতোপূর্বে আমার মতো হয়তো অন্য কোন কলম সৈনিক এসে লেখালেখি করে গেছেন। কিন্তু কেন এই ক্ষোভ। জানতে চাইলে ইমাম সাহেব শোনালেন গত কিছু দিন আগের ঘটনা।
ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের হাজির হাট বাজার জামে মসজিদ সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠনিয়ে। প্রতি বছর দুই ঈদে চরম ভোগান্তিতে পড়েন মসজিদ কমিটি ও দোকান মালিকরা। ব্যবসায়ীরা মসজিদ সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে অসংখ্য দোকান তৈরী করে। ঈদের নামাজের সময় দোকান পাট ভেঙ্গে সরিয়ে দেওয়া হয় যাতে ঈদের নামাজ নির্বিঘ্নে পড়া যায়। এতে মসজিদ কমিটিকে যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হয় তেমনি ব্যবসায়ীদেরও বারবার দোকান ভাঙ্গা গড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয়। উভয় পক্ষেই একটি চূড়ান্ত সমাধানের লক্ষ্যে ওই ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মহিউদ্দিন আজম কিরনের কাছে দ্বরস্থ হন।
হাজিরহাট বাজারের চায়ের দোকানি নুর ইসলাম বলেন, সয়ারের চেয়ারম্যান হামার কপাল খুলি দিচে। সেই জন্যে আইজ হামরা ভরাট করা খালের উপর নতুন দোকান দিবার পাওছি। আল্লাহ তার ভালো করুক। এই দোয়াই হামরা করোচি।

সয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন আজম কিরন বলেন, আমি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান। সবসময় মানবিক কাজ গুলোয় আমি করতে ভালোবাসি। ওই পুকুর ভরাট ছিলো ওই এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি। এটি আমি পূরুন করতে পেরে আমাকে খুব ভালো লগেছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের বিরোধপূর্ণ এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আমি মসজিদ কমিটির সম্মতিক্রমে বাজার সংলগ্ন মসজিদেও ওয়াকফকৃত ১৫ শতকের একটি পুকুর ভরাট করার উদ্যোগী হই। পর পর দুই বার বিভিন্ন সরকারি অনুদান সংগ্রহ করে ও ব্যক্তিগত খরচে অবশেষে পুকুর ভরাট কররি। ফলে মসজিদ কমিটি দোকানপাট গুলো ওই স্থানে সরানোর ব্যবস্থা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিনের বিরোধের সুষ্ঠ একটি সমাধান পাওয়া গেছে।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বলেন, সয়ার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম মহিউদ্দীন আজমের কর্মকান্ড প্রসংশার দাবিদার । তিনি সরকারি প্রকল্প গুলো নিখুত ভাবে বাস্তবায়ন করায় সয়ারে আওয়ামীলীগের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জল হয়েছে। মাননিয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন যেন ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ বাস্তবায়ন হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন আজম কিরন অগ্রনী ভূমিকা পালন করছেন। সেই সাথে খাস জমি উদ্ধার ও দুটি গুচ্ছ গ্রাম নির্মানে সহযোগীতা করে উজ্জল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন।

 

আরও খবর

Sponsered content