আব্দুল মালেক, উলিপুর(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ 7 April 2022 , 11:39:03 প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদে বালু উঠানোর মহাৎসব চলছে। কেউ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে আবার কেউবা ট্রাক্টর দিয়ে বালু বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রায় দুই মাস ধরে চক্রটি মহাৎসবের সহিত বালু বিক্রি করে আসলেও কার্যত কোন ভূমিকা নেয়নি প্রশাসন, ফলে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বালু বিক্রির ফলে বর্ষা মৌসুমে আশপাশের বাড়ি-ঘর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোটি টাকার ব্লক পিচিংয়ে ধ্বস নামার আশংকা করছে স্থানীয় মানুষজন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ৮টি নদ-নদী ভাঙন কবলিত ইউনিয়নের মধ্যে হাতিয়া ইউনিয়ন অন্যতম। এ ইউনিয়নে প্রতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের শিকার হয়ে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুহারা হন। এ ইউনিয়নের অনন্তপুর ঘাট, মাঝিপাড়া, কুমার পাড়ায় ট্রাক্টর দিয়ে অবাধে বালু বিক্রি করতেছে চক্রটি। আর এ চক্রের সাথে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মিরা জড়িত বলে স্থানীয়রা জানান। এছাড়াও গাবুরজান এলাকায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানিক রাশেদুল, জবিয়ল নামের একটি সিন্ডিকেট চক্র বালু তুলতেছে। ড্রেজার মেশিনের বিকট শব্দে আশপাশের শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা চরম কষ্টে দিন পার করছেন। বালু খেঁকোরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেনা। এমনি তাদের তথ্য দিতেও অপারগতা প্রকাশ করেন অনেকে।
এদিকে, ব্রহ্মপুত্রের বুকে জেগে ওঠা চর ও তীরের মাটিও বিক্রি করছে কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র। হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর ঘাট, মাঝিপাড়া, কুমার পাড়ায় ট্রাক্টর দিয়ে অবাধে বালু ও মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন ১২০-১৩০টি মাটি ও বালুবাহী ট্রাক্টরের অবাধ যাতায়াতের কারণে ওই এলাকার পাঁকা-কাচা রাস্তা ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। আর এই বালু তোলার সাথে স্থানীয় প্রভাবশালী জাহাঙ্গীর, সোহেল, রঞ্জু, মিলন, মিন্টু, ফারুক, আলতাফ, রাজু, মুকুল, এনামুল, আনিছুর, মুন্না, সাহেব, সবুজ, মঈনুলসহ চক্রের সদস্যরা। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নদের বালু ও মাটি অবাধে বিক্রি করে আসলেও কার্যত কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন।
এ বিষয়ে বালু উত্তোলনকারী শরিফুল ইসলাম সোহেল ও মিলন মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, সব ম্যানেজ করে বালু তোলা হচ্ছে। যেহেতু এসে দেখে গেলেন, পারলে বন্ধ করে দেন। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ বিষয়ে আমরা সার্বক্ষনিক মনিটরিং করতেছি। এর পরেও কোথাও কোন সমস্যা হলে তাৎক্ষনিক খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার বলেন, পুলিশ নিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অচিরেই একটা অভিযান চালানো হবে।