সারাদেশ

ফুলবাড়ীতে আড়াই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিদ্যুত স্পৃষ্টে ছয় জনের মৃত্যু

  বঙ্গ ডেস্কঃ 15 August 2020 , 1:18:44 প্রিন্ট সংস্করণ

ফুলবাড়ীতে আড়াই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিদ্যুত স্পৃষ্টে ছয় জনের মৃত্যু

এক দিকে জনসচেতনতার অভাব ও অন্য দিকে নতুন নতুন এলাকায় বিদ্যুত ব্যবহারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায় সারা কাজসহ নিম্ন মানের  ইলেকট্রিক সামগ্রী ব্যবহার করায় প্রতিনিয়ত ঘটেছে বিদ্যুত স্পষ্টের ঘর্টনা।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গত আড়াই মাসে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিদ্যুত স্পৃষ্টে ছয় জনের মৃত্যু ঘটে। বেশি বেশি করে বিদ্যুত বিভাগের দিক নিদের্শনামুলক প্রচার-প্রচারনা ও গ্রাহকরা জনসচেতন হলেই বিদ্যুত স্পষ্টে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সেই সাথে বিদ্যুত স্পষ্টে মৃত্যুর কারণগুলো খুজে বের করে প্রতিটি পাড়ামহল্লায় বিদ্যুত ব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ দিক নিদের্শনামুলক প্রচার- প্রচারণা চালাতে বিদ্যুত বিভাগের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সচেতন মহল। আর প্রচার-প্রচারণা না চালালে এভাবেই প্রতিনিয়ত ঘটবে দুঘর্টনা।

নিহতদের সংক্ষিপ্ত বর্ননা দেওয়া হলো-গত ২৯ জুন সিলিং ফ্যানের সংযোগ দিতে গিয়ে বিদ্যুত স্পৃষ্টে জুয়েল রানা নামের (১৪) বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। নিহত কিশোর উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গজেরকুটি গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে গত ৫ জুলাই রাইস কুকারে রান্না করতে গিয়ে বিদ্যুত স্পৃষ্টে জহুরা বেগম নামের (৫৪) বছরের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত নারী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের মিয়াপাড়া গ্রামে বয়জার আলীর স্ত্রী।

গত ১৯ জুলাই বৈদুতিক হাউস ওয়ারিংয়ের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুত স্পৃষ্টে শফিকুল ইসলাম (২৩) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত যুবক উপজেলার সদর ইউনিয়নের পানিমাছকুটি গ্রামে ঈশা মামুদের ছেলে।

গত ৩০ জুলাই লোহার তারে কাপড় শুকাতে গিয়ে বিদ্যুত স্পৃষ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স পড়–য়া শিক্ষার্থী শম্পা রানী পালের মৃত্যু হয়। নিহত শিক্ষার্থী উপজেলা নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্বফুলমতি গৌরাঙ্গ চন্দ্র পালের মেয়ে।

গত ১২ আগষ্ট বিকালে বাঁশ কাঁটতে গিয়ে অসাবধানতা বসত কাঁচা বাঁশটি মেইন তারে পড়ে বিদ্যুত স্পৃষ্টে আব্দুল ছালাম (৪৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত কৃষক উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কুরুষাফেরুষা গ্রামের মৃত রজমান আলীর ছেলে।

গত ৪ আগষ্ট বাড়ীর পার্শে সেচ পাম্পের তার খুলতে গেলে অসাবধানতা বসত বিদ্যুত স্পৃষ্টে ঘটনাস্থলেই মারা যান ছামিউল ইসলাম (১৮)। তিনি উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নগরাজপুর গ্রামের আতিকুর রহমানের ছেলে।

নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল হানিফ সরকার ও ফুলবাড়ী জছিমিয়া মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান, শুধু নতুন নতুন এলাকায় বিদ্যুত সংযোগ স্থাপন করলে হবে না। বিদ্যুত বিভাগ প্রতিদিন মেইন লাইন চেক করা ও বিদ্যুতের লাইনের পাশে গাছপালা কেটে ফেলাসহ প্রতি সপ্তাহে প্রতিটি পাড়ামহল্লায় গিয়ে বিদ্যুত ব্যবহারের উপর গ্রাহকদের জনসচেতনামুলক দিক নিদের্শনামুলক পরামর্শ প্রদানে উঠান বৈঠক করতে হবে। সেই সাথে গ্রাহকদের বাড়ীর ওয়ারিংয়ের জন্য নিন্মমানের ইলেকট্রিক সামগ্রী ব্যবহার না করার পরামর্শ প্রদান করতে হবে। গ্রাহক সচেতন হলে বিদ্যুত স্পষ্টে মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে আসবে।

ফুলবাড়ী পল্লীবিদ্যুতের ইনচার্জ মোর্শেদ আলম জানান, প্রতিটি মৃত্যুর জন্য গ্রাহকরাই দায়ী। আমরা সরকারের নিদের্শনা মোতাবেক গ্রাহকদের সঠিক ভাবে বিদ্যুত ব্যবহারের জন্য প্রতি মাসে এক থেকে দুই বার জনসচেতনামুলক মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। সেই সাথে সঠিকভাবে বিদ্যুত ব্যবহারের জন্য গ্রাহকদের জন্য নিদের্শনামুলক লিফলেট বিতারণসহ প্রতিটি পাড়ামহল্লায় উঠান বৈঠক করি। সেই সঙ্গে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও মসজিদের ইমামদের সাথে বিদ্যুত ব্যবহারের উপর আলোচনা করা হয়। তিনি আরও জানান ভেজা শরীলে কোন প্রকার বৈদ্যুতিক সুইচে হাত দেওয়া যাবে না এবং নিন্ম মানের তার, সুইচসহ বৈদ্যুতিক সামগ্রী ওয়ারিং কাজে ব্যবহার করা যাবে না। সেই সাথে গ্রাহকরা সচেতন হয়ে বিদ্যুত ব্যবহার করলে আর কোন অনাকাংক্ষিত দুঘর্টনা ঘটবে না।

আরও খবর

Sponsered content

error: ছি ! ছি !! কপি করার চেষ্টা করবেন না ।