অন্যান্য

মানব কল্যাণ ঘর সামাজিক সংগঠনের দুস্থদের কম্বল, শাড়ি, লুঙ্গি বিতরণ

  তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধিঃ 4 December 2020 , 6:48:24 প্রিন্ট সংস্করণ

একনা কম্বলের জন্য মুই কত জনের কাছোত হাত পাতছিনুং কিন্তুক কায়ো মোর কথা শুনে নাই। তোমরা আইজ মোক কম্বল দিয়া বাচাঁইনেন। তোমার কম্বল কোনা না পাইলে মুই ঠান্ডাত খুবই কষ্ট পানুং হয়।
মানব কল্যাণ ঘর সামাজিক সংগঠনের দেওয়া কম্বল হাতে নিয়ে এভাবে অনুভুতি ব্যক্ত করেন তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়নের প্রামানিকপাড়া গ্রামের প্রতিবন্ধি মোনা মিয়া(৬৫)। তাঁর সাথে সুর মিলিয়ে চেয়ারম্যানপাড়া গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ মান্দালা রহমান বলেন, ‘এই প্রথম একনা কম্বল পানুং। কতদিন  খালি গায়ে থাকছি, শীতে কতই কষ্ট করছি। তোমার কম্বল কোনা খুব কাজে দিবে ব্যাহে।’
শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) রংপুরের তারাগঞ্জের জগদীশপুর, সরকারপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া, লক্ষীপুর, চেয়ারম্যানপাড়া, ফকিরপাড়ার, মাঝেরহাট, মাটিয়ালপাড়া, মেনানগর, হাজীপুর, বমনদিঘী গ্রামের ১৫০জন দরিদ্র শীর্তাত মানুষের মধ্যে ইকরচালী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে কম্বল, শাড়ি ও লুঙ্গি বিতারণ করা হয়।
এর আগে এসব গ্রামে ঘুরে ঘুরে এ হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষের তালিকা তৈরি করেন ওই সংগঠনের সদস্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এরপর এসব মানুষের হাতে কম্বল, শাড়ি, লুঙ্গি তুলে দেওয়া হয়। শীতার্তদের জন্য এসব কম্বল, শাড়ি, লুঙ্গি পাঠিয়েছিলে সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা বনানী-১২১৩ বাসিন্দা এ.এ মনিরুজ্জামান।
কম্বল হাতে পেয়ে ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মোসলেমা বলেন, ‘মরোনের ঠান্ডা ভাঙাঘরোত হুরহুর করি ঢোকে। ঠান্ডাত নিন যাবার পারি না। মেম্বার-চেয়ারম্যানোক মেলায় কচুং এখান কম্বল দেয় নাই। তোমরা ডাকে আনি কম্বল দিনেন। আল্লাহ তোমার ভালো করুক।’
শাড়ি হাতে পেয়ে জড়িয়ে নিলেন লক্ষীপুর গ্রামের মনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, ‘বহুদিন পর নয়া কাপড় পানু। খুব ভালো নাগোছে। আগোত নয়া কাপড় আছলো না। এখন এইকনা কাপড় পড়ি বেরাইম।’
কম্বল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন মানব কল্যাণ ঘর সামাজিক সংগঠনের ৬৫জন সদস্য। সংগঠনের সভাপতি রংপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শিপুল ইসলাম বলেন, ‘মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত এটি একটি অরাজনৈতি, অলাভজনক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
আমরা সর্বদা চেষ্টা কবর আমাদের এই সংগঠনের মাধ্যমে মানুষকে সহায়তা করার। গ্রামে ঘুরে শাড়ি, লুঙ্গি, কম্বলের তালিকা করতে গিয়ে কিছু অসহায় মানুষকে আমরা খুঁজে পেয়েছি। তাঁরা অতি কষ্টে জীবন যাপন করছেন। ওই সব মানুষকে সংগঠনের মাধ্যমে আমরা কোনো একদিন তাদের ঘর করে দিব।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী জেবা নাসরিন বলেন, এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্যই হলো মানুষের কল্যাণে কাজ করা। করোনাকালে অসহায় দুস্থ মানুষকে কম্বল, নতুন শাড়ি, লুঙ্গি দিতে পেরে খুব ভালোই লাগছে। যিনি শাড়ি, লুঙ্গি, কম্বল পাঠিয়েছেন সেই মনিরুজ্জামান স্যারকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
তারাগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা মানব কল্যাণ ঘর সংগঠনের সদস্য বর্ষা রানী বিনা বলেন, ‘আমি সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা মনিরুজ্জামান স্যার ও উপদেষ্টা রহিদুল চাচ্চুকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করব না।
আমার শিক্ষিকা হয়ে উঠার পিছনে তাদের মতো লোকদের অবদান আছে। আজ তাদের উদ্যোগে আমরা দুস্থদের কম্বল, শাড়ি, লুঙ্গি দিতে পেরেছি। আগামীতে এ ধরণে সামাজিক কার্যক্রম অব্যহৃত রাখতে তাদের সহযোগিতা কামনা করছি।’

আরও খবর

Sponsered content

error: ছি ! ছি !! কপি করার চেষ্টা করবেন না ।