সারাদেশ

শিপ্রার মামলা নেয়নি কক্সবাজার সদর থানা পুলিশ

  বঙ্গ ডেস্ক 19 August 2020 , 10:23:19 প্রিন্ট সংস্করণ

শিপ্রার মামলা নেয়নি কক্সবাজার সদর থানা পুলিশ

ছবি বিকৃত করে ফেইসবুকে শিপ্রার ব্যক্তিগত ছবি পোস্টকারী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার মডেল থানায় মামলা করতে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করতে যান শিপ্রা।

 

এ সময়, কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল রামু থানা ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলার পরামর্শ দিয়েছেন। পুলিশের মামলায় জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিপ্রা দেবনাথের ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে শিপ্রা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাকে হেনস্তায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করারও ঘোষণা দেন তিনি।

 

এছাড়াও, এই বিষয়ে জনস্বার্থে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। রিট আবেদনে শিপ্রাকে নিয়ে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট করায় পুলিশের দুই কর্মকর্তা-সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের এসপি মিজানুর রহমান শেলির বিষয়ে তদন্তেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়।

 

এর আগে,ব্যক্তিগত ছবি ফেসবুকে পোস্টকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করবেন বলে জানান শিপ্রা দেবনাথ। নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদের সহযোগী ও রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ নিজেই সোমবার বেসরকারি চ্যানেলে এক ভিডিও বার্তায় একথা বলেন।

 

শিপ্রা দেবনাথ বলেন, ‘আমি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অষ্টম সেমিস্টারে অধ্যয়নরত, এবং ফ্রিল্যান্সার মিডিয়া কর্মী। আজ একটি নৃশংস ঘটনা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে চাই।’

 

তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী আমাদের গর্ব। অথচ ৩১ জুলাই রাতে এই বাহিনীর কুখ্যাত ওসি প্রদীপ ও তার সহচর ইন্সপেক্টর লিয়াকত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদকে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করে।’

 

পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে শিপ্রা বলেন, ‘মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর রাতে এসে আমাদের কটেজ থেকে পুলিশ আমাদের দুটি মনিটর, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ক্যামেরা, লেন্স, তিনটি হার্ডড্রাইভ এবং আমাদের ফোন ডিভাইস সব নিয়ে যায়। জব্দ তালিকায় যার কোনোটির কোনো উল্লেখ নেই। আমি জানি না, এখন কীভাবে বা কার কাছে সেসব ফেরত চাইব।’

 

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের পার্সোনাল প্রোফাইল ও ডিভাইস থেকে সে সব বিভিন্ন ছবি চুরি করে কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের দায়িত্বশীল অফিসাররাই ফেসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। আমার নামে খোলা হয়েছে ফেক ফেসবুক আইডি, ইনস্টাগ্রাম আইডি। আমার ব্যক্তি জীবনকে যারা অসহনীয় করে তুলেছেন বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও তৈরির মাধ্যমে, তাদের প্রত্যেকের জন্য আমি তথ্য প্রযুক্তির ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব, কথা দিলাম।’

 

‘আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে এভাবে আমার ব্যক্তিগত জীবনকে নিগৃহীত করার প্রচেষ্টা এ বাংলাদেশের আইনে কি শাস্তি যোগ্য অপরাধ নয়? আমি সমস্ত পুলিশ বাহিনীকে দায়ী করছি না। এখানে অনেক সৎ অফিসার রয়েছেন। কিন্তু এরূপ হত্যাকারী কর্মকর্তা এবং একজন নারীকে সামাজিক মাধ্যমে বিকৃতভাবে উপস্থাপনকারী অসুস্থ মানসিকতা সম্পন্ন কিছু পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় না আনা হলে, এই কলঙ্কের দায়ভার জাতি সম্পন্ন বাহিনীর উপর ন্যস্ত করবে।’

 

শিপ্রা দেবনাথ আরো বলেন, ‘একজন মানুষ হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমার টুঁটি চেপে ধরে আমাকে আত্মহননের দিকে ঠেলে দিলে লাখো তরুণ-তরুণী এর প্রতিশোধ নেয়া থেকে নিশ্চয়ই বিরত থাকবে না।’

আরও খবর

Sponsered content