মোঃ রাব্বি ইসলাম আব্দুল্লাহ, (নীলফামারী জেলা) প্রতিনিধী 13 September 2020 , 7:00:22 প্রিন্ট সংস্করণ
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ী ও টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত তিস্তা পাড়ের দুটি গ্রাম যথাক্রমে দোহলপাড়া ও উত্তর খড়িবাড়ি। এই গ্রাম দুটির প্রায় ৮০ শতাংশ জায়গা বছরের ৬ মাস জলাবদ্ধতায় আটকে থাকে।
দোহলপাড়া থেকে উত্তর খড়িবাড়ী যে অংশটুকু প্রতিবছর জলাবদ্ধতায় ডুবে থাকে তার দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ গড়ে ১-২ কিলোমিটার।
এই গ্রাম দুটিতে প্রায় ৪-৫ হাজার মানুষ বসবাস করে। জলাবদ্ধতার মূল কারন হলো প্রতিবছর বন্যার পলি স্তূপ জমা হয়ে তিস্তা নদীর পাড় উচু হয়ে গেছে যার ফলে একবার বৃষ্টি হলে কিংবা বন্যার পানি ডুকে পরলে আর বের হতে পারে না।
এই জলাবদ্ধতার কারনে এ অঞ্চলের কৃষকেরা পাকা ধান, ভুট্টা, মরিচসহ অন্যান্য ফসল পানিতে ডুবে যায় সময় মতো কাটতে পারেনা। জলাবদ্ধতায় জমি ডুবে যাওয়ার কারনে বর্ষার সময় কৃষকেরা চাষাবাদ করতে পারেনা। অন্যদিকে পূর্বে এই বিশাল এলাকা জুড়ে ছিলো এ অঞ্চলের গবাদিপশুর চারণভূমি। কৃষকেরা ফসল কাটার পর থেকে পরবর্তী ফসল লাগানোর পূর্ব পর্যন্ত এখানে গবাদিপশু লালন-পালন করতো এবং ফসলের সময় আইলের ঘাস কেটে গবাদিপশুদের খাওয়াতো। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারনে এখন গবাদিপশু গুলো বছরের ৬ মাস ঘরের মধ্যেই বাঁধা থাকে।
একদিকে জলাবদ্ধতা অন্যদিকে জৈবিক চাহিদার তাড়নায় কৃষকেরা পাড়ি জমায় শহরে। কেউ রিকশা চালায়, কেউ চালায় ঠেলাগাড়ি , কেউ করে রাজমিস্ত্রির কাজ, কেউ আবার কাজ করে অন্যের বাড়িতে। নিজের জমিতে ফসল না ফলানোর কারনে কৃষকেরা এক কেজি ত্রাণের জন্য বর্ষা কালে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পরে।
এই সমস্যা চলে আসছে দীর্ঘ ১৫ বছর থেকে। কৃষকেরা অনেকবার, স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ উপজেলার চেয়ারম্যান ও এমপি মহাদয়ের কাছেও গিয়েছেন কিন্তু তাতে কোন প্রকার সূরাহা হয়নি।
মাত্র ২৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৭-৮ ফুট প্রস্থের (মাত্র ৫-৬ লাখ টাকা ব্যয়ে) যদি একটি ক্যানেল করা যায় তাহলে এই দুটি গ্রামের ৪-৫ হাজার মানুষ অভাব থেকে স্থায়ী মুক্তি পেতে পারে। এ অঞ্চলের মানুষ সরকারের কাছে ত্রাণ চায় না, তারা চায় জলাবদ্ধতার হাত থেকে তাদের জমি গুলো ফিরিয়ে দিতে। যাতে তারা নিজের জমিতে পূর্বের ন্যায় চাষাবাদ করতে পারে।