সারাদেশ

৩ বছরে রোহিঙ্গা শিবিরে ৭৬ হাজার শিশুর জন্ম: সেভ দ্য চিলড্রেন

  বঙ্গ ডেস্ক 26 August 2020 , 2:42:20 প্রিন্ট সংস্করণ

৩ বছরে রোহিঙ্গা শিবিরে ৭৬ হাজার শিশুর জন্ম: সেভ দ্য চিলড্রেন

গত ৩ বছরে বাংলাদেশে আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে ৭৫ হাজার ৯৭১ শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। যা মোট রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৯ শতাংশ। আন্তর্জাতিক শিশুবিষয়ক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

 

সংস্থাটির নতুন এক বিশ্লেষণে দেখানো হয়েছে, গত ৩১ মে পর্যন্ত কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে ৩ বছরের কম বয়সী এ শিশুরা মূলত তাদের মায়েরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পরই জন্মগ্রহণ করেছে। প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার ৩৭ রোহিঙ্গা শিশু কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে বন্দিদশায় জন্মগ্রহণ করেছে।

 

সেভ দ্য চিলড্রেনের জরিপে বলা হয়েছে, এইসব শিশুরা তাদের অনুপযুক্ত পরিস্থিতিতে বাস করছে। তারা যথাযথ শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং চলাফেরার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা প্রায় সম্পূর্ণ সহায়তার ওপর নির্ভর করে জীবনযাপন করছে।

 

গতকাল ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন থেকে সেনা নিপীড়নের মুখে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার ৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ জরিপ প্রকাশ করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন।

 

মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে মায়ের দুর্বিষহ যাত্রার সময় ৩ বছর বয়সী রুনা এই পৃথিবীতে এসেছে। রুনা দীর্ঘস্থায়ী পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। রুনার মা হামিদা সেভ দ্য চিলড্রেনকে বলেন, ‘আমি আমার শিশুদের পড়াশোনা, তাদের ভবিষ্যৎ, তাদের চলাফেরা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’

 

সংস্থাটির বাংলাদেশ শাখার পরিচালক অনো ভান মানেন বলেন, ‘গত ৩ বছরে কক্সবাজার শরণার্থী শিবিরে ৭৫ হাজারেরও বেশি শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। একটি সন্তানের জন্ম একটি আনন্দদায়ক উপলক্ষ, তবে এই শিশুগুলো দুর্ভাগ্যের শিকার। তারা এমন একটি পরিবারে জন্ম নিয়েছে যেখানে তাদের পরিবারগুলো কাজ করতে পারে না, যেখানে তাদের পড়াশোনা এবং স্বাস্থ্যসেবা এবং তাদের চলাফেরার কোনও স্বাধীনতা নেই।’

 

গত ৩ বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার ও দেশের সাধারণ জনগণ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে গ্রহণ করে নিলেও এই সংকটের টেকসই সমাধানে এখনও কোনও অগ্রগতি নেই।

 

সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিচালক অনো ভান মানেন আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা শিশু এবং পরিবারকে মিয়ানমারে স্বেচ্ছায় এবং নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণভাবে তাদের ঘরে ফেরত যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। বিশ্ব নেতারা, বিশেষত যারা মিয়ানমারের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে তাদের এই সংকটের দ্রুত সমাধানের জন্য উৎসাহ দেয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত। আমরা বছরের পর বছর শিশুদের বন্দিদশায় কাটাতে দিতে পারি না।’

 

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক জাতিগত নিধন, হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও জ্বালাও-পোড়াওয়ের শিকার হয়ে নতুন করে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেই। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার সরকারের ওপর বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের ধারাবাহিক চাপ থাকা সত্ত্বেও মিয়ানমার কোনও কথাই ঠিকভাবে কানে তুলছে না।

আরও খবর

Sponsered content