সারাদেশ

৩ হাজার পরিবার ও ৩টি গ্রাম গিলে খেয়েও ভাঙ্গন অব্যাহত তিস্তার

  আব্দুর রহিম (পায়েল) , গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি 26 September 2020 , 6:11:03 প্রিন্ট সংস্করণ

৩ হাজার পরিবার ও ৩টি গ্রাম গিলে খেয়েও ভাঙ্গন অব্যাহত তিস্তার

চলতি মৌসুমে তিস্তার ভয়াবহ ভঙ্গনে উপজেলার প্রায় ৩ হাজারের অধিক পরিবারের বাড়ী-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। সে সাথে বিলীন হয়েছে পূর্ব ইচলী, মধ্য ইচলী ও পশ্চিম ইচলী গ্রামের প্রায় অর্ধেক এলাকাসহ বিশাল আবাদী জমি। নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে ওই এলাকার ১টি মন্দির ও ১টি ঈদগাহ। চলতি মৌসুমে একটানা ৬ মাস ধরে অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন পরিবারগুলোর দূর্দশা চরমে পৌঁছেছে।

সরজমিনে গত শুক্রবার লক্ষীটারী ইউনিয়নের পূর্ব ইচলীর তিস্তার ভাঙন এলাকা দেখতে গেলে কথা হয় স্থানীয় নদী ভাঙ্গন পরিবারগুলোর সাথে। এ সময় মুক্তি বেগম, আজিজুল, আশরাফ, মোবারক, হযরত, মিটু, মনোয়ারুল, আকতারুল, সাজু, আরিফুল, মমিন, নুর ইসলাম, সমসের, তালেব, সামাদ, আশরাফুল সহ অনেকে জানান তাদের দুর্দশার কথা। মুক্তি বেগম পূর্ব ইচলী গ্রামের মিজানুরের মেয়ে। তিনি তার দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। নদীর ভাঙ্গনের কাছে তারা যেন বড়ই অসহায়। গত ৫ বছরে তার বাড়ী নদীতে ভেঙ্গে গেছে ৫ বার। যেটুকু জায়গা-জমি আবাদ করতো তাও এখন নদী গর্ভে।

বাড়ি বিলীন হওয়া নিঃস্ব মুক্তিদের মত এখন বাড়ি ও ভিটে মাটি হারা শত শত পরিবারের এমন নানা কথা আর কান্নায় যেন মায়া হচ্ছেনা তিস্তার। তেমনি সরকারিভাবে নেই কোন সাহায্য সহযোগিতার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ও ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ। আবারো পঞ্চম ধাপে বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টি আর উজানে ভারতের ছেড়ে দেওয়া পানিতে কয়েক দফায় বন্যা ও তিস্তার ভাঙ্গনে উপজেলা তিস্তা নদী বেষ্টিত পরিবারগুলো কয়েক দফায় পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে, তার চেয়েও দফায় দফায় ভাঙনে ভিটে মাটি হারিয়ে শত শত পরিবার বসবাসের অভাবে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। তাদের কষ্ট আর কান্নায় তিস্তা পাড় ভারি হয়ে উঠছে। গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে ে নমে আসা পানিতে ৫ম বারের মত তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিন দিন ধরে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নি¤œনাঞ্চলসহ চরাঞ্চলের প্রায় ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলো বিশুদ্ধ পানি ও রান্নার অভাবে খাবার সংকঠে পড়েছে, তেমনি পয়ঃনিস্কাশন সমস্যা,এবং গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে। অনেকে বাড়ি ছেড়ে উচু স্থানে পলিথিনের ছাপড়ি তুলেছে আবার কেউ পরিচিতদের বাড়ীতে কোন রকম দিন-রাত কাটিয়ে দিচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি তিস্তার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতে বিনবিনা থেকে শংকরদহ পর্যন্ত ৭ কিঃ মি বেরিবাঁধ নির্মিত হলে পশ্চিম ইচলি, মধ্য ইচলী ও পূর্ব ইচলি গ্রামে নদী ভাঙ্গন রোধ সম্ভব। অন্যথায় এলাকার বাকি অংশটুকুও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

আরও খবর

Sponsered content

error: ছি ! ছি !! কপি করার চেষ্টা করবেন না ।